লৌহজং প্রতিনিধি (মুন্সিগঞ্জ) |
মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ে বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় মাহমুদা হাসনা মিম (১৭) নামে উপজেলার খিদিরপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রীর হাত কেটে দিয়েছে এক বখাটে। সে সিরাজদিখান উপজেলার জৈনসার ইউনিয়নের জৈনসার পশ্চিমপাড়া গ্রামের আমির হোসেন শেখের মেয়ে। গত ৩১ অক্টোবর বিকেল ৪টার দিকে উপজেলার খিদিরপাড়া গ্রামে মাহমুদা হাসনা মিমের নানাবাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় লৌহজং থানায় স্কুলছাত্রীর ভাই আরিফ হাসান শেখ বাদী হয়ে অভিযোগ দায়ের করেন। সিরাজদিখান উপজেলার জৈনসার ইউনিয়নের কাঁঠালতলী গ্রামের আজিজ মৃধার ছেলে সংগ্রাম (২৭), শাহ আলম মৃধার ছেলে সম্রাট মৃধা (২৫), কুদ্দুছের ছেলে আফছারকে (২৮) বিবাদী করে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। লিখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে লৌহজং থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।
অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, অনুমানিক ৬ মাস পূর্বে সিরাজদিখান উপজেলার কাঁঠালতলী গ্রামের শাহ আলম মৃধার ছেলে সম্রাট মৃধা স্কুলছাত্রী মাহমুদা হাসনা মিমের পরিবারের কাছে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। মিমের পরিবারের লোকজন বিয়ের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় স্কুলে যাতাযাতের পথে মিমকে বিভিন্ন সময় বিভিন্নভাবে ভয়ভীতিসহ তাকে বিয়ে না করলে ভালো হবে না মর্মে হুমকি দিয়ে আসছিল বখাটে সম্রাট মৃধাসহ তার লোকজন। বিয়ের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ার জেরে গত ৩১ অক্টোবর বিকেল ৪টার দিকে উপজেলার খিদিরপাড়া গ্রামস্থ মিমের বসতবাড়িতে প্রবেশ করে সম্রাট মৃধার নেতৃত্বে সঙ্গীয় সংগ্রাম ও আফছারসহ বেশ কয়েকজন মাহমুদা হাসনা মিমের ওপর অতর্কিত হামলা চালায় এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে কোপ দিয়ে বাম হাতে গুরুতর কাটা রক্তাক্ত জখম করে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে লৌহজং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য নিয়ে গেলে অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতালে রেফার করেন। বর্তমানে স্কুলছাত্রী শঙ্কামুক্ত।
ভিকটিমের ভাই আরিফ হাসান শেখ জানান, বাড়ির দক্ষিণ পাশের মাঠে আমার মা ও বোন মাহমুদা হাসনা মিম ধান শুকানোর কাজে ব্যস্ত ছিল। সেখান থেকে আমার বোন মোবাইল চার্জ দেয়ার জন্য ঘরে যায়। ঘর থেকে বের হয়ে উঠানে আসামাত্রই পূর্বে থেকে ওতপেতে থাকা সংগ্রাম আমার বোনের মুখ চেপে ধরে। সম্রাট মৃধা বোনের পরনের ওড়না দিয়ে তার গলায় প্যাঁচ দিয়ে বাড়ির পাশে ফাঁকা জায়গায় নিয়ে যায় এবং হত্যার উদ্দেশ্যে তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে। ওই কোপ ফেরাতে গিয়ে মিমের বাম হাতে গুরুতর জখম হয়। সম্রাটের সাথে থাকা আফছারসহ তিনজন আমার বোনকে এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি ও লাথি মেরে পালিয়ে যায়। আমার বোনের হাতে ১৫-১৬টি শেলাই পড়েছে। আমি এ ব্যাপারে থানায় তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছি। আমারা তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
এদিকে অভিযুক্ত সম্রাট মৃধার সাথে যোগাযোগ করে এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, আমি তো তখন বাড়িতে ঘুমাচ্ছিলাম। আমি এর কিছুই জানি না।
লৌহজং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাসুদুর রহমান বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনাস্থলে তদন্তের জন্য পুলিশ পাঠিয়েছি। উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
0 Comments